Sunday, July 13, 2025

বিএনপির সঙ্গে দিল্লির সম্পর্কের প্রধান শর্তই জামায়াতের ‘সঙ্গ ত্যাগ’

আরও পড়ুন

Logo
বিএনপির সঙ্গে দিল্লির সম্পর্কের প্রধান শর্তই জামায়াতের ‘সঙ্গ ত্যাগ’

প্রতিবেশী ভারতকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে একটা কথা চালু আছে, যে তারা বাংলাদেশে এতকাল ‘সব ডিম শুধু একটি ঝুড়িতেই রেখেছে’ – মানে শুধু একটি দলের সঙ্গেই তাদের সম্পর্ক ছিল, আর সেটা আওয়ামী লীগ।

কিন্তু ২০২৪ এর ৫ অগাস্ট বাংলাদেশে যে নাটকীয় পটপরিবর্তন ঘটে গেছে, সেই ঘটনাপ্রবাহ বিএনপির সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে একটা বাঁকবদলের অবকাশ তৈরি করেছে।

দিল্লিতে রাজনীতি, নিরাপত্তা বা কূটনীতির পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, ভারতের বিশেষ কয়েকটি ‘দাবি’ বা ‘প্রয়োজনে’ যদি বিএনপি ইতিবাচক সাড়া দেয়, তাহলে ভারতের দিক থেকেও বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার হাত বাড়াতে কোনও অসুবিধা থাকার কারণ নেই।

যেহেতু কোণঠাসা আওয়ামী লীগের চট করে রাজনৈতিক কামব্যাকের কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না এবং বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচনে বিএনপির ভালো ফল করার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে – তাই খালেদা জিয়ার দলই যে ভারতের জন্য এই মুহূর্তে সেরা বাজি এবং সম্ভবত একমাত্র বাজি, সেটাও তারা কেউ কেউ মনে করিয়ে দিচ্ছেন।

আরও পড়ুনঃ  এখন কেউ চাইলেই কোনো ইমামকে বহিষ্কার করতে পারবে না: ধর্ম উপদেষ্টা

আরও পড়ুনঃ শেখ হাসিনার নামে মামলা প্রত্যাহার দাবিতে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিল
এই পটভূমিতে ভারতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কের প্রধান শর্তই জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করা। আর বিএনপির সঙ্গে দিল্লির এখন একটা সম্পর্ক স্থাপনের ভাল সুযোগ তৈরি হওয়ার কারণও তার দীর্ঘদিনের সঙ্গী জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব বেড়ে যাওয়া।

ভারতের দিক থেকে সম্পূর্ণ অন্য একটি কারণেও বিএনপির সঙ্গে দিল্লির এখন একটা সম্পর্ক স্থাপনের ভাল সুযোগ তৈরি হয়েছে – কারণ দীর্ঘদিনের সঙ্গী জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব বাড়ছে।

আরও পড়ুনঃ  ভারতে তিন বাংলাদেশি গ্রেপ্তার

ঢাকায় ভারতের সাবেক হাই কমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস বলেন, ‘ডেফিনিটলি জামায়াত আর বিএনপির মতবিরোধগুলো এখন খুব স্পষ্ট। ওনাদের একজন বড় নেতা এটাও বলেছেন যে কোনও অ্যালায়েন্স হওয়া সম্ভব না। তো আমি নিশ্চিত যে এই ডেভেলপমেন্টগুলো ভারত সরকার নিজেদের তরফ থেকে খুব সতর্কতার সঙ্গে দেখছে এবং অ্যাসেস করছে!’

আরও পড়ুনঃ লাইভে এসে যা বললেন স্বৈরচার শেখহাসিনা
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাইরের কোনও দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করার এমনিতে কোনও কারণ নেই – তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি অবশ্যই কিছুটা ভিন্ন!

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব ঢাকায় গিয়ে কোনও রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে যোগ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন, এমনও নজির আছে।

২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে তখনকার পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং ঢাকায় গিয়ে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গেও বৈঠক করেছিলেন, যে সফর নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি।

আরও পড়ুনঃ  দেশের মাটিতে মিললো বিরল খনিজ, চীন বিমুখ যুক্তরাষ্ট্র ইউনূসের দরজায় আসবে?

এরপর থেকে ভারত যদিও প্রকাশ্যে অন্তত বাংলাদেশের ঘরোয়া রাজনীতি থেকে নিজেদের দূরে রাখারই চেষ্টা করে, কিন্তু জামায়াত বা ইসলামপন্থি দলগুলোকে নিয়ে ভারতের আপত্তি একেবারেই কোনও গোপন বিষয় নয়।

আরও পড়ুনঃ জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ, প্রজ্ঞাপন জারি
বিজেপি এমপি শমীক ভট্টাচার্য যেমন সরাসরি বলছেন, ‘তবে আমরা স্পষ্টতই জামাতের যে চিন্তাভাবনা, তালেবানেইজেশনের যে কনসেপ্ট তার ঘোরতর নিন্দা করি। এটার যে বিরোধিতা করে যাওয়া, সেটা আমরা করছি এবং করেও যাব!’

ভারতের কর্মকর্তা ও নীতিনির্ধারকরা এখনও একান্ত আলোচনায় পরিষ্কারই বলছেন আগামী দিনে বিএনপির সঙ্গে তাদের যে কোনও সম্পর্কের ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান ‘শর্ত’ হতে হবে জামায়াতের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সঙ্গ তাদের ত্যাগ করতেই হবে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ