Sunday, July 13, 2025

১৯৭৪ সালেই বাংলাদেশের কাছে মাফ চেয়েছিল পাকিস্তান!

আরও পড়ুন

দৈনিক জনকণ্ঠ || Daily Janakantha
বাংলাদেশ
দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস প্রতিবেদন
১৯৭৪ সালেই বাংলাদেশের কাছে মাফ চেয়েছিল পাকিস্তান!
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:৫৯, ২২ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ১১:১২, ২২ এপ্রিল ২০২৫

FacebookTwitterEmailWhatsAppLinkedInMessengerShare
১৯৭৪ সালেই বাংলাদেশের কাছে মাফ চেয়েছিল পাকিস্তান!
ছবি : সংগৃহীত

দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর পক্ষ থেকে
বার্নার্ড ওয়েনরাব্ট এর বিশেষ প্রতিবেদন যা প্রকাশিত হয়েছিল ১১ এপ্রিল, ১৯৭৪ সালে সেখানে স্পষ্ট শিরোনামে বর্ণিত হয়েছে, বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাইল পাকিস্তান ।

১৯৭১ সালের বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধ ও সহিংসতার জন্য ১০ এপ্রিল, ১৯৭৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চেয়েছিল

পাকিস্তান সরকার। এই ক্ষমা প্রার্থনার পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকার ১৯৫ জন পাকিস্তানি সেনাকর্মীর যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ১০ এপ্রিল, ১৯৭৪ এর রাতে ভারত, পাকিস্তান ও

আরও পড়ুনঃ  ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ভারত ও চীনা শিক্ষার্থীদের মামলা

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। চুক্তিতে পাকিস্তান সরকার ১৯৭১ সালে সংঘটিত যে কোনো অপরাধের জন্য নিন্দা ও গভীর অনুশোচনা প্রকাশ করেছিলেন ।

পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো বাংলাদেশের জনগণকে অতীতের ভুলগুলো ক্ষমা করে পুনর্মিলনের পথে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানিয়েছিলেন।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকার অতীত ভুলে গিয়ে নতুনভাবে সম্পর্ক গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছিল । পাকিস্তানের এই অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার ১৯৫ জন পাকিস্তানি

সেনাকর্মীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া বাতিলের সিদ্ধান্তও নিয়েছিল। এই চুক্তির ফলে ৯৩,০০০ পাকিস্তানি যুদ্ধবন্দীকে দ্রুত তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হওয়ার কথা হয়েছিল, যার মধ্যে অভিযুক্ত ১৯৫ জন সেনাকর্মীও

আরও পড়ুনঃ  পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধের সক্ষমতা নেই দাবিতে ভারতীয় সেনা কর্মকর্তাদের বৈঠক ত্যাগের ভাইরাল ভিডিও নিয়ে যা জানা গেল

ছিল । ইতিমধ্যে ৮০,০০০-এর বেশি যুদ্ধবন্দী পাকিস্তানে ফিরে গিয়েছিল। একইভাবে পাকিস্তানে আটকে পড়া প্রায় ১.৭৫ থেকে ২ লাখ বাঙালিকেও বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছিল তখন ।

এই চুক্তির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, বাংলাদেশে বসবাসরত বিহারি মুসলিম সম্প্রদায়ের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ। প্রায় ৫ লাখ বিহারি, যারা নিজেদের পাকিস্তানি নাগরিক মনে করে, তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল

চুক্তিতে। পাকিস্তান সরকার চার ধরনের বিহারিকে গ্রহণ করতে সম্মত হয়েছে – যাদের পশ্চিম পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত, পাকিস্তানে পরিবার রয়েছে, সাবেক সরকারি কর্মচারী এবং যারা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি

সেনাবাহিনীকে সমর্থন করায় বাংলাদেশে নিরাপত্তাহীনতায় ছিল । পাকিস্তান তখন ১ লাখ বিহারিকে গ্রহণ করলেও নতুন চুক্তিতে প্রত্যাখ্যানের কারণ জানানো এবং আবেদন পুনর্বিবেচনার সুযোগ দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছিল ।

আরও পড়ুনঃ  ছেলেকে ছেড়ে মা, স্বামীকে ছেড়ে স্ত্রী চলে যাচ্ছেন নিজ দেশে

এই চুক্তিকে ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হচ্ছিল , কারণ এটি ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধের জন্য পাকিস্তানের প্রথম আনুষ্ঠানিক দায়স্বীকার। কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই সমঝোতা বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কের জটিল

ইস্যুগুলোতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছিল । তবে অনেকেই পাকিস্তানের এই সীমিত দায়স্বীকার এবং বিচার প্রক্রিয়া বাতিলের সিদ্ধান্তকে ন্যায়বিচারের বিনিময়ে রাজনৈতিক শান্তি হিসেবে দেখছিলেন । বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধের শিকার পরিবারগুলো এই সিদ্ধান্তকে মেনে

নিতে কঠিন সময় পার করেছিলেন বলে জানা গেছে। চুক্তির পূর্ণ বিবরণ তিন দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছিল যেখানে এই ঐতিহাসিক সমঝোতার বিস্তারিত শর্তাবলি উল্লেখ করা হয়েছিল।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ