Monday, July 14, 2025

কাশ্মীরে ভয়াবহ হামলার দায় স্বীকারকারী কে এই টিআরএফ?

আরও পড়ুন

Channel 24
আন্তর্জাতিক
A-AA+
কাশ্মীরে ভয়াবহ হামলার দায় স্বীকারকারী কে এই টিআরএফ?
মো. নূর-এ-আলম নুহাশ
প্রকাশিত : ১৩:০৭, ২৩ এপ্রিল ২০২৫ | আপডেট: ১৩:১৭, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

কাশ্মীরে ভয়াবহ হামলার দায় স্বীকারকারী কে এই টিআরএফ?X
কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার দায় স্বীকার করে টিআরএফ।

ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) হামলা চালায় বন্দুকধারীরা। ভয়াবহ এই হামলায় বিদেশি নাগরিকসহ অন্তত ২৬ জন

নিহত হয়েছেন। জানা গেছে, ট্রেকিং অভিযানে অংশ নেওয়া একটি পর্যটক দলকে লক্ষ্য করে আচমকা গুলি চালায় অজ্ঞাত পরিচয়ধারী তিন থেকে চারজন অস্ত্রধারী। মুহূর্তেই আনন্দঘন পরিবেশ রূপ নেয় নির্মম ভয়াবহতায়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, নৃশংস এই হামলার দায় স্বীকার করেছে স্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ বা ‘টিআরএফ’। দেশটিতে সন্ত্রাসী

সংগঠন হিসেবে পরিচিত গোষ্ঠীটি ২০১৯ সালে কার্যক্রম চালু করে। ওই বছরই মোদি সরকার সংবিধান থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করেছিল।

দেশটির গণমাধ্যম হামলকারীদের একটি ছবি প্রকাশ করেছে। এটিকে কোনো হামলাকারীর প্রথম ছবি বলেও উল্লেখ করা হচ্ছে। তবে ছবিতে অস্ত্রধারীর সামনের দিক দেখা না যাওয়ায় মুখ বোঝা যায়নি। তার হাতে ছিল

আরও পড়ুনঃ  কাশ্মীরের ঘটনাকে ইসলামপন্থী হামলা বললেন তুলসী, মোদির পাশে থাকার বার্তা

একটি একে-৪৭ রাইফেল। মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে ‘মিনি সুইজারল্যান্ড’ নামে পরিচিত বাইসারান তৃণভূমিতে এই বন্দুকধারীসহ কয়েকজন হামলায় অংশ নেয়।

হামলায় অংশ নেয়া বন্দুকধারী
হামলায় অংশ নেয়া বন্দুকধারী

টিআরএফের উৎপত্তি ও কার্যক্রম
‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ বা টিআরএফ জম্মু ও কাশ্মীরভিত্তিক একটি সশস্ত্র সংগঠন, যা মূলত ভারতীয় সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ করে থাকে। এই

সংগঠনটি নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার (এলইটি) একটি অংশ হিসেবেও পরিচিত, যা পাকিস্তান থেকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।

আরও পড়ুন: উরিতে ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ, নিহত ২

২০২০ সাল থেকে জম্মু ও কাশ্মীরে বিভিন্ন হামলার দায় স্বীকার করে আসছে টিআরএফ। বিশেষ করে পাকিস্তান ভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বার পাশাপাশি জইশ-ই-মহম্মদ, হিজবুল মুজাহিদিনসহ বিভিন্ন গোষ্ঠীর হয়ে টিআরএফ কাজ করে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

Advertisement
১৯৬৭ সালের বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনের আওতায় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে টিআরএফ গোষ্ঠী এবং তাদের সকল ফ্রন্ট গ্রুপকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল

আরও পড়ুনঃ  সড়ক থেকে ডেকে নিয়ে ২০ বছরের যুবককে বলাৎকার

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেই সময়ে মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, অনলাইনে কাশ্মীরি যুবকদের জঙ্গি কর্মকাণ্ডে যুক্ত করছে এই সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীটি।

পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড, সন্ত্রাসবাদীদের অনুপ্রবেশে সহায়তা এবং পাকিস্তান থেকে জম্মু ও কাশ্মীরে অস্ত্র ও মাদক পাচারের অভিযোগও ওঠে এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, অঞ্চলটির জনগণকে সরকারের বিরুদ্ধে খেপিয়ে তুলতে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে সংগঠনটি। এই গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ড ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্বের জন্য ক্ষতিকর বলেও জানায় ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

লস্কর-ই-তৈয়বার সঙ্গে সম্পর্ক
টিআরএফকে লস্কর-ই-তৈয়বার একটি অংশ, শাখা বা প্রক্সি বাহিনী হিসেবে ধরা হয়। কারণ, টিআরএফের জন্ম হয়েছিল কাশ্মীরের শেখ সাজ্জাদ গুলের হাত ধরে। নতুন জঙ্গিগোষ্ঠী তৈরির আগে গুল ছিলেন লস্কর-ই-তৈয়বার

কমান্ডার। কাশ্মীরিদের নিয়ে গঠিত আরেকটি সশস্ত্রগোষ্ঠী হিজবুল মুজাহিদিনের দলছুট গোষ্ঠীর কমান্ডার মাইসের আহমেদ দারও পরবর্তীতে শামিল হয়েছিলেন টিআরএফে। ২০২৩ সালের নভেম্বরে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছিলেন তিনি।

আরও পড়ুনঃ  ভারতকে ঘায়েল করতে ১৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি আছে : পাকিস্তানের মন্ত্রী

ভারতের বহুল আলোচিত মুম্বাই হামলার মূলেও ছিল লস্কর-ই-তৈয়বা। ১৯৯০ সালে হাফেজ মোহাম্মদ সাঈদ, আবদুল্লাহ ইউসুফ আযযাম ও জাফর ইকবাল

আফগানিস্তানে লস্কর-ই-তৈয়বা প্রতিষ্ঠা করেন। পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের লাহোরের নিকটে মুরিদকে নামক জায়গায় এর সদর অবস্থিত।

টিআরএফ সম্পর্কে আর যা জানা গেছে
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম বলছে, ২০২১ সালের জুনে জম্মু ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স (আইএফ) স্টেশনে টুইন-ড্রোন

হামলার পাশাপাশি সীমান্তের ওপার থেকে পাঠানো মনুষ্যবিহীন বিমান যান ব্যবহার করে অস্ত্র ও বিস্ফোরক ফেলার বেশ কয়েকটি উদাহরণের পিছনেও রয়েছে টিআরএফ।

এ ছাড়া ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক মূল্যায়নে উঠে এসেছে যে টিআরএফ মূল এলইটি গ্রুপ ছাড়া আর কিছুই নয়। ২০২০ সাল থেকে বেসামরিকদের ওপর এই

সমস্ত হামলার পিছনে এলইটির অত্যন্ত দক্ষ সন্ত্রাসীরা রয়েছে। পুলওয়ামা হামলা এবং জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বাতিল করার পরে, ২০১৯ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও আইএসআইয়ের ভারতবিরোধী পরিকল্পনাকারীদের দ্বারায় টিআরএফ সৃষ্টি বলেও জানায় ভারত।ৎ

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ