Sunday, July 13, 2025

ইরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করল যুক্তরাষ্ট্র

আরও পড়ুন

আলোচিত পরমাণু প্রকল্পকে ঘিরে ইরানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপের মধ্যেই দেশটির বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এবার এই নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে ইরানের সামরিক বাহিনীর সমরাস্ত্র বিষয়ক গবেষণা সংস্থা অর্গানাইজেশন অব ডিফেন্সিভ ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্চের (এসপিএনডি) সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৩ জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা ও একটি প্রতিষ্ঠানের ওপর।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা হয়েছে এই নিষেধাজ্ঞা। তিন কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানের নাম-পরিচয় গোপন রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞার কোপে পড়া এই কর্মকর্তারা ইরানের পরমাণু প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে ওই তিন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় সম্পদ ইতোমধ্যে ফ্রিজ করা হয়েছে এবং যতদিন এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে, তারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন না এবং কোনো মার্কিন প্রতিষ্ঠানও তাদের সঙ্গে কোনো প্রকার আর্থিক চুক্তি করতে পারবে না।

আরও পড়ুনঃ  বাবার ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

পৃথক এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মার্কো রুবিও বলেছেন, “ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচি ধারাবাহিক ও উল্লেখযোগ্যভাবে সম্প্রসারণ করে চলেছে এবং পারমাণবিক অস্ত্র এবং পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য দ্বৈত-ব্যবহারের গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে।”

তিনি আরও বলেন, “বিশ্বে ইরানই একমাত্র দেশ— যাদের কোনো পরমাণু অস্ত্র নেই কিন্তু ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত রয়েছে।”

প্রসঙ্গত, ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে গত বেশ কয়েক বছর ধরে ব্যাপক অস্বস্তিতে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ ওয়াশিংটনের অভিযোগ— ইরানের পরমাণু প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য পারমাণবিক বোমা বানানো। দেশটিকে এই কর্মসূচি থেকে বিরত রাখতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ‘জ্যাকোপা’ নামে একটি চুক্তি করেছিলেন। তবে তার উত্তরসূরী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৭ সালে তার প্রথম শাসন মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রকে এই চুক্তি থেকে সরিয়ে নেন।

আরও পড়ুনঃ  ‘মার্চ টু যমুনা’ ঘোষণা করলেন হাসনাত আবদুল্লাহ

ফলে চুক্তিটি অকার্যকর হয়ে যায় এবং ইরানও তার পরমাণু প্রকল্পে মনোনিবেশ করে। গেল কয়েক বছরে পারমাণবিক বোমার প্রধান উপকরণ ইউরেনিয়ামের মজুতও সমৃদ্ধ করেছে দেশটি। গত ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে পরমাণু শক্তির ব্যবহার পর্যবেক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ) জানিয়েছিল, ইরান ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত করছে। যদি এই ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতা ৯০ শতাংশে উন্নীত করা হয়, সেক্ষেত্রে অনায়াসে এই ইউরেনিয়াম ব্যবহার করে অন্তত ৬টি পরমাণু বোমা বানানো সম্ভব।

আরও পড়ুনঃ  ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধাবস্থা বাংলাদেশের বাণিজ্যের জন্য উদ্বেগের

আইআইএ-এর এই তথ্যে পর সচেতন হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন। ট্রাম্প নিজে ইরানের সঙ্গে সরাসরি সংলাপের আহ্বান জানিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে চিঠি দেন। ইরানের সরকারও তাতে সাড়া দেয়। কাতারের রাজধানী দোহায় চলছে ওয়াশিংটন ও তেহরানের কর্মকর্তাদের সংলাপ এবং ইরানের চাওয়া অনুযায়ী সংলাপে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় আছে ওমান।

সংলাপের চতুর্থ রাউন্ড শেষ হয়েছে গতকাল সোমবার। ওই দিনই দেশটির বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করল যুক্তরাষ্ট্র।

সূত্র : এএফপি, এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ