Monday, July 14, 2025

প্রতিবন্ধী কোটায় চাকরি নিলো ছাত্রলীগ, একজনের পরীক্ষা দিলো অন্যজন

আরও পড়ুন

২০২২ সালের ৫ এপ্রিল জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র নবম গ্রেডের উপ-গ্রন্থাগারিক ও ফিল্ড অফিসার পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। কিন্তু এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়ম ও পক্ষপাতের অভিযোগ উঠেছে, যার মূল কেন্দ্রে রয়েছেন আফসানা আক্তার।

বেসরকারি এক টিভি চ্যানেলের অনুসন্ধানে জানা যায়, ময়মনসিংহের নান্দাইলের সাবেক এমপি আনোয়ারুল আবেদিন খান তুহিনের সঙ্গে আফসানার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াটি তার অনুকূলে

সাজানো হয়েছিল। তৎকালীন সংস্কৃতি সচিব মনসুর আহমেদ এবং গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক কবি মিনার মনসুরের সঙ্গেও তার বিশেষ যোগসাজশ ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।

নিয়োগ পরীক্ষায় আফসানার খাতায় অন্য ব্যক্তির হাতের লেখা পাওয়া গিয়েছিল, যা নিয়োগ কমিটির সভাপতি অসীম কুমার দে মেসেঞ্জারে স্বীকার করেছেন। তবে তিনি এই প্রমাণ হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেছেন,

আরও পড়ুনঃ  আ.লীগের মিছিলে অংশ নেওয়া কেসিসির কর্মচারী গ্রেপ্তার

খাতা সংরক্ষিত আছে কিন্তু এখন দেওয়া হবে না। দেশ টিভির কাছে একটি কল রেকর্ডিং রয়েছে, যেখানে আফসানার নম্বর টেম্পারিং ও অবৈধ নিয়োগের বিষয়টি স্বীকার করা হয়েছে। এতে দায়ী হিসেবে তুহিন, মিনার

মনসুর ও সংস্কৃতি সচিবের নাম উঠে আসে। আফসানা নিজেও স্বীকার করেছেন যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি তার জন্মতারিখের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে সরাসরি জিজ্ঞাসা করলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও ছাত্রলীগের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করেছেন।

আরও পড়ুনঃ  পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান

শুধু আফসানা নয়, সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সুপারিশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা রাসেল রানাকে ‘প্রতিবন্ধী’ হিসাবে দেখিয়ে একই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়, যদিও তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন।

রাসেলের সহপাঠী ও সহকর্মীরা নিশ্চিত করেছেন যে তিনি তার প্রকৃত পরিচয় গোপন করে এই চাকরি পেয়েছেন। আরও চাঞ্চল্যকর বিষয় হলো, চাকরি স্থায়ী হওয়ার

আগেই আফসানা ও রাসেলকে গ্রন্থকেন্দ্রের তৎকালীন পরিচালক মিনার মনসুর ‘শুদ্ধাচার পুরস্কার’ দেন, যা নিয়োগের অনিয়মকে আরও উসকে দেয়।

আরও পড়ুনঃ  হামাসের অতর্কিত হামলায় কোণঠাসা ইসরায়েলি সেনারা, চাঞ্চল্যকর ভিডিও প্রকাশ

গ্রন্থকেন্দ্রের বই বিতরণ থেকে শুরু করে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ দুদকে জমা পড়েছে। দুদক পরিচালক জানিয়েছেন, তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা

নেওয়া হবে। কিন্তু বর্তমান পরিচালক আফসানা বেগম অভিযোগ এড়িয়ে গিয়ে অভিযুক্তদেরই সমর্থন করেছেন। সরকারি দপ্তরে এমন অনিয়মের ফলে একদিকে মেধাবীরা চাকরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, অন্যদিকে সুবিধাভোগ

করছেন অসাধু কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা। গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে এমন দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি সাধারণ মানুষ কখনোই মেনে নেবে না। এই কেলেঙ্কারির তদন্ত ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা প্রয়োজন, যাতে ভবিষ্যতে এমন অনিয়ম রোধ করা যায়।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ