Thursday, July 10, 2025

যারা একসময় দেশের জন্য আইন বানাতেন, আজ তারাই সেই আইনের কাঠগড়ায়

আরও পড়ুন

জাতীয়
যারা একসময় দেশের জন্য আইন বানাতেন, আজ তারাই সেই আইনের কাঠগড়ায়
মুহাম্মদ ওমর ফারুক
প্রকাশিত: ১৩:২০, ২২ এপ্রিল ২০২৫

FacebookTwitterEmailWhatsAppLinkedInMessengerShare
যারা একসময় দেশের জন্য আইন বানাতেন, আজ তারাই সেই আইনের কাঠগড়ায়
ছবি: সংগৃহীত

একসময় দেশের সর্বোচ্চ আইনসভা—সংসদ ভবনের ভেতরে ছিলেন তারা। মঞ্চের আলো, হাততালি, কণ্ঠে দেশ গঠনের অঙ্গীকার। তারা ছিলেন নীতিনির্ধারক, আইন প্রণেতা। তাদের কলমের খোঁচায় তৈরি হতো নতুন আইন,

যা নিয়ন্ত্রণ করতো কোটি মানুষের জীবনযাপন। কিন্তু সময় বদলেছে। সেই মানুষগুলো—আজ আর কোনো বিল বা সংশোধনীতে স্বাক্ষর দিচ্ছেন না। বরং দাঁড়িয়ে আছেন সেই আইন কাঠগড়ার সামনে, যার রূপকার ছিলেন একদিন। আজ তারা পরিচিত নন আর সম্মানীয়

আরও পড়ুনঃ  মসজিদে ঢুকে ৩ ভাইকে হত্যা: প্রধান আসামি গ্রেপ্তার

“জনপ্রতিনিধি” হিসেবে। বরং তারা পরিচিত “আসামি” হিসেবে—আইনের মুখোমুখি এক অভিযুক্ত ব্যক্তি। সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও এমপিরা, যারা কোনোদিন কল্পনাও করেননি যে আদালতের গ্যালারিতে একদিন তাদের জন্য থাকবে হ্যান্ডকড়া ও পাহারাদার পুলিশ।

ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, ড. আব্দুর রাজ্জাক, কামরুল ইসলাম, মুহাম্মদ ফারুক খান, দীপু মনি, গোলাম দস্তগীর গাজী, শাজাহান খান, উপদেষ্টা

সালমান এফ রহমান ও তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ আরও অনেককে। এ যেন এক সময়ের সর্বেসর্বা মানুষদের শূন্যতার প্রতিচ্ছবি।

আরও পড়ুনঃ  ঢাকার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে গোপন কারাগার, অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এল ভয়াল জীবনের না বলা কথা

এই চিত্র যেন এক বাস্তবতাকে আমাদের সামনে এনে দেয়—ক্ষমতার অপব্যবহারের মূল্য চূড়ান্ত হয় দেরিতে হলেও নিশ্চিতভাবে। দু’দশক ধরে যাদের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে ক্ষমতার দুর্গ, তাদের এই পতন শুধু রাজনীতির এক

অধ্যায়ের ইতি নয়, বরং জনগণের কাছে এক সতর্কবার্তা। একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলছিলেন—“এটি আমাদের জন্য ইতিহাসের আয়না—যেখানে ক্ষমতা, অহংকার আর অন্যায়ের ফলাফল একসময় ধরা পড়ে।”

এই ১৯ জন সাবেক প্রভাবশালী নেতার বিরুদ্ধে বিচার চলছে। প্রমাণিত হলে শাস্তি অনিবার্য। তবে প্রশ্ন রয়ে যায়—এই বিচার কি শুধুই প্রতীকী? নাকি এটি হয়ে উঠবে রাজনৈতিক জবাবদিহির যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত? গণতন্ত্রের সৌন্দর্য তখনই খুঁজে পাওয়া যায়, যখন আইনের সামনে সবাই সমান।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ